কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তেরর কবিতা-সমূহ - TECHNICAL BANGLA

কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তেরর কবিতা-সমূহ

আসসালামু আলাইকুম, বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন,,,?? Technical Bangla পক্ষ থেকে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম।

হ্যালো বন্ধুরা কবিতা পর্ব-৯: এ আপনাদের সবাইকে স্বাগতম।আমি আজকে নিয়ে আসলাম কবি সত্যেন্দ্রনাথ দও  এর লেখা ১৫ টি কবিতা গুলো সবাই মনযোগ দিয়ে পড়বেন।
চলুন দেখে আসি কবিতা গুলো- 

১.         অধম ও উত্তম
             সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত 

কুকুর আসিয়া এমন কামড় 
 দিল পথিকের পায় 
 কামড়ের চোটে বিষদাঁত ফুটে 
 বিষ লেগে গেল তায়। 

 ঘরে ফিরে এসে রাত্রে বেচারা 
 বিষম ব্যথায় জাগে, 
 মেয়েটি তাহার তারি সাথে হায় 
 জাগে শিয়রের আগে। 

 বাপেরে সে বলে ভর্ৎসনা-ছলে 
 কপালে রাখিয়া হাত, 
 “তুমি কেন বাবা, ছেড়ে দিলে তারে 
 তোমার কি নেই দাঁত!” 

 কষ্টে হাসিয়া আর্ত কহিল 
 “তুই রে হাসালি মোরে, 
 দাঁত আছে বলে কুকুরের পায় 
 দংশি কেমন করে! 

 কুকুরের কাজ কুকুর করেছে 
 কামড় দিয়েছে পায়, 
 তা ব’লে কুকুরে কামড়ানো কি রে 
 মানুষের শোভা পায়?”

২.       প্রথম গালি
         সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত 

বয়েস- আড়াই কি দুই 
 মনটি নির্মল জুই, 
 হালকা যেন হাওয়া 
 মেয়ে সে মুখ-চাওয়া 
 মায়ের কাছে কাছে 
 ছায়ার মত আছে 
 জানে না মা বিনা কিছুই৷ 

 আর সে দিদি চেনে তার 
 দিদি সে সাথী খেলিবার, 
 দুটিতে পিঠোপিঠি 
 তবুও খিটিমিটি 
 হয় না বেশী বেশী 
 নাইক রেষারেষি 
 কলহ নাইক নিতুই৷ 

 জগৎ মানে যেন,-তার- 
 মা, দিদি আপনি সে আর, 
 এ ছাড়া কিছুই নেই 
 চেনেনা কারুকেই, 
 অকথা কুকথার 
 ধারে না কোনো ধার 
 শেখেনি আজও ‘তুই’ ‘মুই’৷ 

 একদা হ’ল দুটি বোনে 
 পুতুল নিয়ে কি কারণে 
 ঝগড়া কাড়াকাড়ি, 
 তখন দিয়ে আড়ি 
 হারিয়া কাদোঁ-কাদোঁ 
 হ’য়ে সে আধো আধো 
 কহিল ‘ডিডি!টুমি-টুই!’

৩.    ইলশে গুঁড়ি
       সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত 

ইলশে গুঁড়ি! ইলশে গুঁড়ি 
 ইলিশ মাছের ডিম। 
 ইলশে গুঁড়ি ইলশে গুঁড়ি 
 দিনের বেলায় হিম। 
 কেয়াফুলে ঘুণ লেগেছে, 
 পড়তে পরাগ মিলিয়ে গেছে, 
 মেঘের সীমায় রোদ হেসেছে 
 আলতা-পাটি শিম্। 
 ইলশে গুঁড়ি হিমের কুঁড়ি, 
 রোদ্দুরে রিম্ ঝিম্। 
 হালকা হাওয়ায় মেঘের ছাওয়ায় 
 ইলশে গুঁড়ির নাচ,- 
 ইলশে গুঁড়ির নাচন্ দেখে 
 নাচছে ইলিশ মাছ। 
 কেউ বা নাচে জলের তলায় 
 ল্যাজ তুলে কেউ ডিগবাজি খায়, 
 নদীতে ভাই জাল নিয়ে আয়, 
 পুকুরে ছিপ গাছ। 
 উলসে ওঠে মনটা, দেখে 
 ইলশে গুঁড়ির নাচ। 
 ইলশে গুঁড়ি পরীর ঘুড়ি 
 কোথায় চলেছে, 
 ঝমরো চুলে ইলশে গুঁড়ি 
 মুক্তো ফলেছে! 
 ধানেক বনে চিংড়িগুলো 
 লাফিয়ে ওঠে বাড়িয়ে নুলো; 
 ব্যাঙ ডাকে ওই গলা ফুলো, 
 আকাশ গলেছে, 
 বাঁশের পাতায় ঝিমোয় ঝিঁঝিঁ, 
 বাদল চলেছে। 
 মেঘায় মেঘায় সূর্য্যি ডোবে 
 জড়িয়ে মেঘের জাল, 
 ঢাকলো মেঘের খুঞ্চে-পোষে 
 তাল-পাটালীর থাল। 
 লিখছে যারা তালপাতাতে 
 খাগের কলম বাগিয়ে হাতে 
 তাল বড়া দাও তাদের পাতে 
 টাটকা ভাজা চাল; 
 পাতার বাঁশী তৈরী করে’ 
 দিও তাদের কাল। 
 খেজু পাতায় সবুজ টিয়ে 
 গড়তে পারে কে? 
 তালের পাতার কানাই ভেঁপু 
 না হয় তাদের দে। 
 ইলশে গুঁড়ি -জলের ফাঁকি 
 ঝরছে কত বলব তা কী? 
 ভিজতে এল বাবুই পাখী 
 বাইরে ঘর থেকে;- 
 পড়তে পাখায় লুকালো জল 
 ভিজলো নাকো সে। 
 ইলশে গুঁড়ি! ইলশে গুঁড়ি! 
 পরীর কানের দুল, 
 ইলশে গুঁড়ি! ইলশে গুঁড়ি! 
 ঝরো কদম ফুল। 
 ইলশে গুঁড়ির খুনসুড়িতে 
 ঝাড়ছে পাখা -টুনটুনিতে 
 নেবুফুলের কুঞ্জটিতে 
 দুলছে দোদুল দুল্; 
 ইলশে গুঁড়ি মেঘের খেয়াল 
 ঘুম-বাগানের ফুল।

৪.       ছিন্নমুকুল
         সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত 

সবচেয়ে যে ছোট পিড়ি খানি 
 সেখানি আর কেউ রাখেনা পেতে, 
 ছোটথালায় হয় নাকো ভাতবাড়া 
 জল ভরে না ছোট্ট গেলাসেতে। 
 বাড়ির মধ্যে সবচেয়ে যে ছোট 
 খাবার বেলা কেউ ডাকে না তাকে। 
 সবচেয়ে যে শেষে এসেছিল, 
 তারই খাওয়া ঘুচেছে সব আগে। 

 সবচেয়ে যে অল্পে ছিল খুশি, 
 খুশি ছিল ঘেষাঘেষির ঘরে, 
 সেই গেছে হায়, হাওয়ার সঙ্গে মিশে, 
 দিয়ে গেছে জায়গা খালি করে। 
 ছেড়ে গেছে পুতুল, পুঁতির মালা, 
 ছেড়ে গেছে মায়ের কোলের দাবি। 
 ভয়ভরা সে ছিল যে সব চেয়ে 
 সেই খুলেছে আঁধার ঘরের চাবি। 

 হারিয়ে গেছে, হারিয়ে গেছে ওরে! 
 হারিয়ে গেছে ‘বোল’ বলা সেই বাঁশি 
 দুধে ধোওয়া কচি সে মুখখানি 
 আঁচল খুলে হঠাৎ স্রোতের জলে 
 ভেসে গেছে শিউলী ফুলের রাশি, 
 ঢুকেছে হায় শশ্মান ঘরের মাঝে 
 ঘর ছেড়ে হায় হৃদয় শশ্মানবাসী। 

 সবচেয়ে যে ছোট কাপড়গুলি 
 সেইগুলি কেউ দেয় না মেলে ছাদে, 
 যে শয্যাটি সবার চেয়ে ছোট, 
 আজকে সেটি শূন্য পড়ে কাঁদে। 
 সবচেয়ে যে শেষে এসেছিল 
 সেই গিয়েছে সবার আগে সরে। 
 ছোট্ট যে জন ছিল রে সবচেয়ে, 
 সেই দিয়েছে সকল শূন্য করে।

৫.       খাঁটি সোনা
         সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত 

মধুর চেয়ে আছে মধুর 
 সে এই আমার দেশের মাটি 
 আমার দেশের পথের ধূলা 
 খাঁটি সোনার চাইতে খাঁটি। 

 চন্দনেরি গন্ধভরা, 
 শীতল করা, ক্লান্তি-হরা 
 যেখানে তার অঙ্গ রাখি 
 সেখানটিতেই শীতল পাটি। 

 শিয়রে তার সূর্ এসে 
 সোনার কাঠি ছোঁয়ায় হেসে, 
 নিদ-মহলে জ্যোৎস্না নিতি 
 বুলায় পায়ে রূপার কাঠি। 

 নাগের বাঘের পাহারাতে 
 হচ্ছে বদল দিনে রাতে, 
 পাহাড় তারে আড়াল করে 
 সাগর সে তার ধোয়ায় পাটি। 
 নারিকেলের গোপন কোষে 
 অন্ন-পানী' যোগায় গো সে, 
 কোল ভরা তার কনক ধানে 
 আটটি শীষে বাঁধা আঁটি। 

 মধুর চেয়ে আছে মধুর 
 সে এই আমার দেশের মাটি।

৬.      দূরের পাল্লা
        সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত

ছিপখান তিন-দাঁড়- 
 তিনজন মাল্লা 
 চৌপর দিন-ভোর 
 দ্যায় দূর-পাল্লা! 
         পাড়ময় ঝোপঝাড় 
         জঙ্গল-জঞ্জাল, 
         জলময় শৈবাল 
         পান্নার টাঁকশাল। 
 কঞ্চির তীর-ঘর 
 ঐ-চর জাগছে, 
 বন-হাঁস ডিম তার 
 শ্যাওলায় ঢাকছে| 
         চুপ চুপ -ওই ডুব 
         দ্যায় পান্ কৌটি 
         দ্যায় ডুব টুপ টুপ 
         ঘোমটার বৌটি! 
 ঝকঝক কলসীর 
 বক্ বক্ শোন্ গো 
 ঘোমটার ফাঁক বয় 
 মন উন্মন গো। 
         তিন-দাঁড় ছিপখান 
         মন্থর যাচ্ছে, 
         তিনজন মাল্লায় 
         কোন গান গাচ্ছে? 
 রূপশালি ধান বুঝি 
 এইদেশে সৃষ্টি, 
 ধুপছায়া যার শাড়ী 
 তার হাসি মিষ্টি। 
         মুখখানি মিষ্টিরে 
         চোখদুটি ভোমরা 
         ভাব-কদমের -ভরা 
         রূপ দেখ তোমরা! 
 ময়নামতীর জুটি 
 ওর নামই টগরী, 
 ওর পায়ে ঢেউ ভেঙে 
 জল হোলো গোখরী! 
         ডাক পাখী ওর লাগি' 
         ডাক ডেকে হদ্দ, 
         ওর তরে সোঁত-জলে 
         ফুল ফোটে পদ্ম। 
 ওর তরে মন্থরে 
 নদ হেথা চলছে, 
 জলপিপি ওর মৃদু 
 বোল বুঝি বোলছে। 
         দুইতীরে গ্রামগুলি 
         ওর জয়ই গাইছে, 
         গঞ্জে যে নৌকা সে 
         ওর মুখই চাইছে। 
 আটকেছে যেই ডিঙা 
 চাইছে সে পর্শ, 
 সঙ্কটে শক্তি ও 
 সংসারে হর্ষ। 
         পান বিনে ঠোঁট রাঙা 
         চোখ কালো ভোমরা, 
         রূপশালী-ধান-ভানা 
         রূপ দেখ তোমরা।

৭.     কোন দেশে
        সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত

কোন্ দেশেতে তরুলতা 
 সকল দেশের চাইতে শ্যামল? 
 কোন্ দেশেতে চলতে গেলেই 
 দলতে হয় রে দুর্বা কোমল? 
 কোথায় ফলে সোনার ফসল, 
 সোনার কমল ফোটেরে? 
 সে আমাদের বাংলাদেশ, 
 আমাদেরই বাংলা রে! 

 কোথায় ডাকে দোয়েল-শ্যামা 
 ফিঙে নাচে গাছে গাছে? 
 কোথায় জলে মরাল চলে, 
 মরালী তার পাছে পাছে? 
 বাবুই কোথা বাসা বোনে, 
 চাতক বারি যাচে রে? 
 সে আমাদের বাংলাদেশ, 
 আমাদেরই বাংলা রে!

৮.           জবা
        সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত

আমারে লইয়া সুখী হও তুমি ওগো দেবী শবাসনা, 
 আর খুঁজিও না মানব-শোনিত, আর তুমি খুঁজিও না। 
 আর মানুষের হৃত্ পিণ্ডটা নিওনা খড়গে ছিঁড়ে, 
 হাহকার তুমি তুলো না গো আর সুখের নিভৃত নীড়ে। 
 এই দেখ আমি উঠেছি ফুটিয়া উজলি পুষ্পসভা, 
 ব্যথিত ধরার হৃত্ পিণ্ডটি আমি যে রক্তজবা। 
 তোমার চরণে নিবেদিত আমি, আমি যে তোমার বলি, 
 দৃষ্টি-ভোগের রাঙ্গা খর্পরে রক্ত কলিজা-কলি। 
 আমারে লইয়া খুশি হও ওগো, নম দেবি নম নম, 
 ধরার অর্ঘ্য করিয়া গ্রহণ, ধরার শিশুরে ক্ষম।

৯.            ঝর্ণা
        সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত 


ঝর্ণা! ঝর্ণা! সুন্দরী ঝর্ণা!
তরলিত চন্দ্রিকা! চন্দন-বর্ণা!
অঞ্চল সিঞ্চিত গৈরিকে স্বর্ণে,
গিরি-মল্লিকা দোলে কুন্তলে কর্ণে,
তনু ভরি' যৌবন, তাপসী অপর্ণা!
                   ঝর্ণা!
পাষাণের স্নেহধারা! তুষারের বিন্দু!
ডাকে তোরে চিত-লোল উতরোল সিন্ধু|
মেঘ হানে জুঁইফুলী বৃষ্টি ও-অঙ্গে,
চুমা-চুমকীর হারে চাঁদ ঘেরে রঙ্গে,
ধূলা-ভরা দ্যায় ধরা তোর লাগি ধর্ণা!
                ঝর্ণা!
এস তৃষার দেশে এস কলহাস্যে-
গিরি-দরী-বিহীরিনী হরিনীর লাস্যে,
ধূসরের ঊষরের কর তুমি অন্ত,
শ্যামলিয়া ও পরশে কর গো শ্রীমন্ত;
ভরা ঘট এস নিয়ে ভরসায় ভর্ণা;
              ঝর্ণা!
শৈলের পৈঠৈয় এস তনুগত্রী!
পাহাড়ে বুক-চেরা এস প্রেমদাত্রী!
পান্নার অঞ্জলি দিতে দিতে আয় গো,
হরিচরণ-চ্যুতা গঙ্গার প্রায় গো,
স্বর্গের সুধা আনো মর্ত্যে সুপর্ণা!
               ঝর্ণা!
মঞ্জুল ও-হাসির বেলোয়ারি আওয়াজে
ওলো চঞ্চলা! তোর পথ হল ছাওয়া যে!
মোতিয়া মোতির কুঁড়ি মূরছে ও-অলকে;
মেখলায়, মরি মরি, রামধনু ঝলকে
তুমি স্বপ্নের সখী বিদ্যুত্পর্ণা
                 ঝর্ণা!

১০.  অশোক
    সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত 

মুকুল-ভোজী কোকিল এল কুঞ্জে! 
ভ্রমর পাঁতি দিবস রাতি গুঞ্জে! 
মঞ্জুরিয়া উঠিনু মোরা হর্ষে 
অরুণ-রাগে তরুণ আলো স্পর্শে 
এসেছে পিক অরুণ তার নেত্র! 
অশোক ফুলে অরুণময় ক্ষেত্র। 
শীতের সাথে শোকের স্মৃতি নষ্ট, 
তরুণ আজি, -ছিল যা কীটদষ্ট 
রসের লীলা চলছে দিবারাত্রি! 
পাটল পথে মিলেছে প্রেম-যাত্রী! 
হরিতে শোক অশোক ফুটে পুঞ্জে! 
মুকুল-ভোজী কোকিল এল কুঞ্জে! 

১১.   ফুলের ফসল
         সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত 

জোটে যদি মোটে একটি পয়সা 
খাদ্য কিনিয়ো ক্ষুধার লাগি’ 
দুটি যদি জোটে অর্ধেকে তার 
ফুল কিনে নিয়ো, হে অনুরাগী! 
বাজারে বিকায় ফল তণ্ডুল 
সে শুধু মিটায় দেহের ক্ষুধা, 
হৃদয়-প্রাণের ক্ষুধা নাশে ফুল 
দুনিয়ার মাঝে সেই তো সুধা! 

১২.     যদি
    সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত 

যদি কুসুম-শরে হৃদয় বেঁধে 
তবে কেঁদ না, 
সে যে ফুলের সুখ-পরশ মাঝে 
মৃদু বেদনা। 
সে যে দিনের দাহে কুঞ্জ-ছায়ে 
স্বপ্ন আনে বিভোল বায়ে, 
ঘুমের শেষে আলোর দেশে 
আধ-চেতনা। 

১৩.     বিরহী
      সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত 

গাঙে যখন জোয়ার আসে 
থেকো তুমি সাগরে, 
ওই পরশে সরস বারি 
মাখব অঙ্গে আদরে। 

হারা আমার হিয়ার টানে 
চেয়ো বারেক তারার পানে, 
পড়ব দোঁহে দোঁহার লিপি 
আকাশ ভরা আখরে! 


১৪.    মানুষ জাতি
     সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত 

জগৎ জুড়িয়া এক জাতি আছে 
সে জাতির নাম মানুষ জাতি; 
এক পৃথিবীর স্তন্যে লালিত 
একই রবি শশী মোদের সাথী। 
শীতাতপ ক্ষুধা তৃষ্ণার জ্বালা 
সবাই আমরা সমান বুঝি, 
কচি কাঁচাগুলি ডাঁটো করে তুলি 
বাঁচিবার তরে সমান যুঝি। 
দোসর খুঁজি ও বাসর বাঁধি গো, 
জলে ডুবি, বাঁচি পাইলে ডাঙ্গা,কালো আর ধলো বাহিরে কেবল 
ভিতরে সবারই সমান রাঙা। 
বাহিরের ছোপ আঁচড়ে সে লোপ 
ভিতরের রং পলকে ফোটে, 
বামুন, শূদ্র, বৃহৎ, ক্ষুদ্র 
কৃত্রিম ভেদ ধুলায় লোটে।… 
বংশে বংশে নাহিক তফাত 
বনেদি কে আর গর্-বনেদি, 
দুনিয়ার সাথে গাঁথা বুনিয়াদ্ 
দুনিয়া সবারি জনম-বেদী। 

১৫.     কেন
     সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত 


আজি গোলাপ কেন রাঙা হয়ে 
উঠল প্রভাতে! 
হাজার ফুলের মধ্যিখানে 
নূতন শোভাতে! 
পক্ষঘেরা আঁখির পাতে 
স্বপন লেগেছিল রাতে, 
চাঁদ বুঝি তায় চুমেছিল 
নিশির সভাতে! 
তাই সে অধর কাঁপছে বুঝি 
স্বপ্নে পাওয়া পরশ খুঁজি! 
অরুণ হয়ে উঠছে সে কার 
পরাণ লোভাতে! 

সুন্দর সুন্দর কবিতা দেওয়া হয়েছে। আশা করি সবাই মনযোগ দিয়ে পড়বেন। আমরা চেষ্টা করবো আপনাদের মনের মতো কবিতা দেয়ার জন্য,, পরবর্তী পর্ব পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। "ধন্যবাদ"

No comments

Theme images by diane555. Powered by Blogger.