ছোট্ট সোনামনিদের কবিতা - TECHNICAL BANGLA

ছোট্ট সোনামনিদের কবিতা

ছোটদের মজার মজার কবিতা


আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ, পাঠক বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন,,,??আশা করি সবাই ভালো আছেন।TECHNICAL BANGLA  পক্ষ থেকে, আমি নয়ন আছি, আপনাদের সাথে বরাবরের মতো সবাইকে স্বাগতম।মানুষকে  শিখানোই আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য। প্রিয়  পাঠক,,, বন্ধুরা আজকে আমি ছোটদের জন্য মজার মজার কবিতা শেয়ার করব।
অবশেষে একটা কথা বলা দরকার আপনার যদি ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই অন্যের  মাঝে শেয়ার করবেন এবং সবাইকে পড়ার সুযোগ করে দিবেন।

হ্যালো বন্ধুরা ছোটদের কবিতা পর্ব-০২: এ আপনাদের আবার স্বাগতম।পাঠক বন্ধুরা কবিতা গুলো পড়ে মজা পাবেন এবং ছোটদের কবিতা গুলো শেখানোর চেষ্টা করব। আজ সেগুলাই শেয়ার করতে যাচ্ছি। এখানে বিভিন্ন লেখকের কবিতা থাকবে। অনেক কথা বললাম, যদি লেখার ভিতরে কোনো ভুল ত্রুটি  হয়ে থাকে তাহলে সবাই ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন। আর কথা বলি তাহলে চলুন,,,,



♦♦♦চলুন ছোটদের  কবিতা পড়ে আসি-

১.   মামার বাড়ি
       জসীমউদ্দীন 


আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা,
 ফুল তুলিতে যাই
 ফুলের মালা গলায় দিয়ে
 মামার বাড়ি যাই।
 মামার বাড়ি পদ্মপুকুর
 গলায় গলায় জল,
 এপার হতে ওপার গিয়ে
 নাচে ঢেউয়ের দল।

 দিনে সেথায় ঘুমিয়ে থাকে
 লাল শালুকের ফুল,
 রাতের বেলা চাঁদের সনে
 হেসে না পায় কূল।
 আম-কাঁঠালের বনের ধারে
 মামা-বাড়ির ঘর,
 আকাশ হতে জোছনা-কুসুম
 ঝরে মাথার ‘পর।

 রাতের বেলা জোনাক জ্বলে
 বাঁশ-বাগানের ছায়,
 শিমুল গাছের শাখায় বসে
 ভোরের পাখি গায়।
 ঝড়ের দিনে মামার দেশে
 আম কুড়াতে সুখ
 পাকা জামের শাখায় উঠি
 রঙিন করি মুখ।
 কাঁদি-ভরা খেজুর গাছে
 পাকা খেজুর দোলে
 ছেলেমেয়ে, আয় ছুটে যাই
 মামার দেশে চলে।

২.     বীরপুরুষ 
    রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর


মনে করো, যেন বিদেশ ঘুরে
 মাকে নিয়ে যাচ্ছি অনেক দূরে।

 তুমি যাচ্ছ পালকিতে, মা, চ’ড়ে
 দরজা দুটো একটুকু ফাঁক ক’রে,
 আমি যাচ্ছি রাঙা ঘোড়ার ‘পরে
 টগবগিয়ে তোমার পাশে পাশে।
 রাস্তা থেকে ঘোড়ার খুরে খুরে
 রাঙা ধূলোয় মেঘ উড়িয়ে আসে।

 সন্ধ্যে হল, সূর্য নামে পাটে,
 এলেম যেন জোড়াদিঘির মাঠে।
 ধূ ধূ করে যে দিক-পানে চাই,
 কোনোখানে জনমানব নাই,
 তুমি যেন আপন-মনে তাই
 ভয় পেয়েছ-ভাবছ, ‘এলেম কোথা।’
 আমি বলছি, ‘ভয় কোরো না মা গো,
 ওই দেখা যায় মরা নদীর সোঁতা।’

 আমরা কোথায় যাচ্ছি কে তা জানে-
 অন্ধকারে দেখা যায় না ভালো।
 তুমি যেন বললে আমায় ডেকে,
 ‘দিঘির ধারে ওই-যে কিসের আলো!’
 এমন সময় ‘হাঁরে রে রে রে রে’

 ওই – যে কারা আসতেছে ডাক ছেড়ে!
 তুমি ভয়ে পালকিতে এক কোণে
 ঠাকুর-দেবতা স্মরণ করছ মনে,
 বেয়ারাগুলো পাশের কাঁটাবনে
 আমি যেন তোমায় বলছি ডেকে,
 ‘আমি আছি, ভয় কেন, মা, করো!’

 তুমি বললে, ‘যাস নে খোকা ওরে,’
 আমি বলি, ‘দেখো-নাচুপ করে।’
 ছুটিয়ে ঘোড়া গেলেম তাদের মাঝে,
 কী ভয়ানক লড়াই হল মা যে
 শুনে তোমার গায়ে দেবে কাঁটা।
 কত লোক যে পালিয়ে গেল ভয়ে,
 কত লোকের মাথা পড়ল কাটা।।

 এত লোকের সঙ্গে লড়াই ক’রে,
 ভাবছ খোকা গেলই বুঝি মরে।
 আমি তখন রক্ত মেখে ঘেমে
 বলছি এসে, ‘লড়াই গেছে থেমে,’
 তুমি শুনে পালকি থেকে নেমে
 চুমো খেয়ে নিচ্ছ আমায় কোলে
 বলছ, ‘ভাগ্যে খোকা সঙ্গে ছিল’
 কী দুর্দশাই হত তা না হলে!’

৩.   আমার বাড়ি
       জসীমউদ্দীন
 
আমার বাড়ি যাইও ভোমর,
 বসতে দেব পিঁড়ে,
 জলপান যে করতে দেব
 শালি ধানের চিঁড়ে।
 শালি ধানের চিঁড়ে দেব,
 বিন্নি ধানের খই,
 বাড়ির গাছের কবরী কলা,
 গামছা-বাঁধা দই।
 আম-কাঁঠালের বনের ধারে
 শুয়ো আঁচল পাতি,
 গাছের শাখা দুলিয়ে বাতাস
 করব সারা রাতি।
 চাঁদমুখে তোর চাঁদের চুমো
 মাখিয়ে দেব সুখে
 তারা ফুলের মালা গাঁথি,
 জড়িয়ে দেব বুকে।
 গাই দোহনের শব্দ শুনি
 জেগো সকাল বেলা,
 সারাটা দিন তোমায় লয়ে
 করব আমি খেলা।
 আমার বাড়ি ডালিম গাছে
 ডালিম ফুলের হাসি,
 কাজলা দীঘির কাজল জলে
 কাঁসগুলি যায় ভাসি।
 আমার বাড়ি যাইও ভোমর,
 এই বরাবর পথ,
 মৌরী ফুলের গন্ধ শুঁকে
 থামিও তব রথ।

৪.  শিশুর পণ
  গোলাম মোস্তফা

এই করিনু পণ
 মোরা এই করিনু পণ
 ফুলের মতো গড়ব মোরা
 মোদের এই জীবন।
 হাসব মোরা সহজ সুখে
 গন্ধ রবে লুকিয়ে বুকে
 মোদের কাছে এলে সবার
 জুড়িয়ে যাবে মন।

নদী যেমন দুই কূলে তার
 বিলিয়ে চলে জল,
 ফুটিয়ে তোলে সবার তরে
 শস্য, ফুল ও ফল।
 তেমনি করে মোরাও সবে
 পরের ভাল করব ভবে
 মোদের সেবায় উঠবে হেসে
 এই ধরণীতল।
 সূর্য যেমন নিখিল ধরায়
 করে কিরণ দান,
 আঁধার দূরে যায় পালিয়ে
 জাগে পাখির গান।
 তেমনি মোদের জ্ঞানের আলো
 দূর করিবে সকল কালো
 উঠবে জেগে ঘুমিয়ে আছে
 যে সব নীরব প্রাণ।

No comments

Theme images by diane555. Powered by Blogger.